সার্বজনীন পেনশন স্কীম কী ?

উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি এবং সকাল নাগরিকের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে নিয়ে ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা- টেকসই উন্নয়নের অন্যতম শর্ত। বাংলাদেশের দ্রুত বৃদ্ধি শীল জনসংখ্যার মধ্যে বয়স্কদের সংখ্যা ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যার ১০% এর বেশি মানুষ ৬০ বছরের বেশি বয়সী। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেক বয়স্ক মানুষেরাই এর উৎস কমে যায় এবং তাদের আর্থিক নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হতে হয়। এ সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০২২ সালে একটি সার্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করে। যার লক্ষ দেশের প্রতিটি নাগরিকের বার্ধক্য প্রতিবন্ধিতা বা আয় সম্পর্কিত ঝুকি মোকাবেলা করতে সাহায্য করা। এইচ ক্রিমটি প্রধানত সামাজিক নিরাপত্তা প্রধান এবং নাগরিকদের জীবনকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করার জন্য পরিকল্পিত এবং দেশের সকল বয়স্ক নাগরিকের ন্যূনতম আর্থিক সহায়তা প্রদান করা। 

সার্বজনীন পেনশন স্কিম কি ? 

সার্বজনীন পেনশন স্কিম ইউনিভার্সাল পেনশন স্কিম হল একটি অর্থনৈতিক উদ্যোগ যা দেশের নাগরিকদের একটি নির্দিষ্ট বয়সের পরে পেনশন প্রদান করার ব্যবস্থা করে। এর ফলে নাগরিকরা যখন কর্ম ক্ষমতা হারাবেন তখন তারা একটি স্থিতিশীল আয় পেতে পারেন। এইসক্রিম দিয়ে একটু সামাজিক নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করে যাদের দেশের প্রবেশ নাগরিক একটি সম্মানজনক জীবন যাপন করতে পারেন। 

বাস্তবায়নকারী সংস্থা 

বাংলাদেশের সরকারের একটি নির্দিষ্ট সংস্থা আইএসএমটি বাস্তবায়ন করে। সাধারণত সামাজিক কল্যাণ মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয় বা পেনশন সম্পর্কিত কোন সংস্থা এর দেখাশোনা করে।  এই সংস্থাটি স্কীমটির নীতি নির্ধারণ, নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং পেনশন প্রদান করার করার দায়িত্বে থাকে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনার ভূমিকা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।তিনি সামাজিক নিরাপত্তা এবং সমতার উপর জোর দেন, যা পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা স্কীম গঠনে প্রভাব ফেলে।

বঙ্গবন্ধুর বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সার্বজনীন পেনশন স্কীম বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেন।তার অধীনে সামাজিক নিরাপত্তা নীতি ও কার্যক্রমে অগ্রগতি হয়েছে এবং পেনশন স্কীমটি একটি প্রধান উদ্যোগ হিসেবে বাস্তবায়িত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন যে, এই ধরণের স্কীম দেশের সকল নাগরিককে সমতার ভিত্তিতে সুরক্ষা প্রদান করবে এবং প্রবীণ নাগরিকদের জন্য একটি সম্মানজনক জীবন নিশ্চিত করবে।

সার্বজনীন পেনশনের মূল বৈশিষ্ট্য

যোগ্যতা: ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী যেকোনো বাংলাদেশী নাগরিক এই স্কীমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

অবদান: স্কীমের অংশগ্রহণকারীদের প্রতি মাসে নূন্যতম ৫০০ টাকা করে অবদান প্রদান করতে হবে। অংশগ্রহণকারী কমপক্ষে ১০ বছর অবদান রাখার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেয়া হবে।

পেনশন: ৬০ বছর বয়সে পৌঁছালে স্কীমে অংশগ্রহণকারীরা প্রতি মাসে নূন্যতম ৩ হাজার টাকা পেনশন পাবেন। অবদানের পরিমাণ বেশি হলে পেনশনের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। 

সার্বজনীন পেনশনের স্কীমসমূহ

প্রবাস:

  • প্রবাসী বাংলাদেশীরা এই স্কীমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
  • মাসিক চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করা যাবে।
  • অবসর গ্রহণের পর নিয়মিত পেনশন পাওয়া যাবে।

প্রগতি:

  • বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা এই স্কীমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
  • নিয়োগকর্তা ও কর্মচারী উভয়ই মাসিক চাঁদা প্রদান করবেন।
  • অবসরগ্রহণের পর আকর্ষণীয় পেনশন সুবিধা পাওয়া যাবে।

সুরক্ষা:

  • অনানুষ্ঠানিক ক্ষেত্রের কর্মীরা, যেমন- রিকশাওয়ালা, কৃষক, ছোট ব্যবসায়ীরা এই স্কীমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
  • সরকার মাসিক চাঁদার একটি অংশ প্রদান করবেন।
  • নূন্যতম ১০ বছর চাঁদা প্রদানের পর আজীবন পেনশন পাওয়া যাবে।

সমতা:

  • দরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিরা এই স্কীমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
  • সরকার পুরো মাসিক চাঁদা প্রদান করবেন।
  • ৬০ বছর বয়সে পৌঁছালে নিয়মিত পেনশন পাওয়া যাবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url