এক নজরে কুরবানের ফজিলত ও শর্ত
ইসলামে কুরবানীর গুরুত্ব অপরিসীম। কুরবান আরবী শব্দ। যার অর্থ কুরবত তথা নৈকট্য। ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট প্রাণী জবাই করাকে কুরবানী বলা হয়।
এটি ঈদুল আযহা উপলক্ষে পালন করা হয় এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু জবাই করার মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রয়াস করা হয়।
কুরবানীর ফজিলত ও গুরুত্ব
১. আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন:কুরবানী মূলত আল্লাহর প্রতি পূর্ণাঙ্গ আনুগত্যের প্রকাশ। হযরত ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাঈল (আঃ)-কে কুরবানী করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। আল্লাহ তাদের এই আত্মত্যাগের নিদর্শনকে সম্মানিত করেছেন এবং কুরবানীকে মুসলিম উম্মাহর জন্য বাধ্যতামূলক কররেছেন।
২. তাকওয়া প্রকাশ :কুরবানীর মাধ্যমে মুসলমানদের তাকওয়া বা খোদাভীতি প্রকাশ পায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, "তাদের রক্ত এবং গোশত আল্লাহর কাছে পৌঁছায়না, কিন্তু তোমাদের তাকওবা পৌঁছে যায়।" (সূরা হজ্জ: ৩৭)
৩. পাপ মোচন :কুরবানীর মাধ্যমে মুসলমানদের পাপ মোচন হয়। হাদিসে আছে, "কুরবানীর পশুর প্রথম রক্তবিন্দু যমীনে পড়ার সাথে সাথে কুরবানীদাতার সব গোনাহ মাফ হয়ে যায়।" (তিরমিযী)
৪. সমাজে সাম্যতা প্রতিষ্ঠা করা :কুরবানীর গোশত গরীব, দুঃখী এবং অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়, যা সমাজে সাম্যতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠা করে।
৫. আখেরাতে পুরষ্কার :কুরবানীর মাধ্যমে আখেরাতে মহান পুরষ্কার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। মুহাম্মদে আরবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেচন, "আল্লাহ তায়ালার নিকট কুরবানীর দিনে রক্তপাতে অধিক প্রিয় আর কোন কাজ নেই।" (তিরমিযী)
কুরবানীর শর্ত ও নিয়মাবলী
১. প্রাণী নির্বাচন :কুরবানীর জন্য নির্দিষ্ট বয়স ও শারীরিক সুস্থতার প্রাণী নির্বাচন লরা জরুরি। উট ৫ বছর, গরু ২ বছর এবং ছাগল-ভেড়া ১ বছরের হতে হবে।
কুরবানীর সময় নিয়্যত করা আবশ্যক। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নিয়্যত করা হয়।
কুরবানী মুসলিম জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি শুধু আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের মাধ্যম নয়, বরং তা সমাজে ভ্রাতৃত্ব, সাম্য ও সহমর্মিতার উদাহরণ হিসেবে কাজ করে। আল্লাহ আমাদের সবার কুরবানী কবুল করুন এবং এই ইবাদতের মাধ্যমে আমাদের তাকওয়া বৃদ্ধি করুন। আমিন।