বাংলাদেশের প্রকৃতি: ছয় ঋতুর মহাকাব্য

বাংলাদেশ সবুজের সমারোহ,নদীর দেশ,পাহাড়ের অঞ্চল,সমুদ্রের তীর,ম্যনগ্রোভ বন এবং অসংখ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এক অপূর্ব নিদর্শন।
ঋতুচক্রের পরিবর্তনের সাথে সাথে রুপ বদলে এই দেশ প্রকৃতির অপার রহস্য উন্মোচন করে।প্রতিটি ঋতুই আলাদা আলাদা রঙে, সুরে এবং ভাবনায় ভরপুর।

গ্রীষ্মকাল

বাংলাদেশের ঋতুচক্রের সূচনা হয় গ্রীষ্মকাল দিয়ে।গ্রীষ্ম রৌদ্রের ঝলমলে ঋতু।দীর্ঘ দিন, তীব্র রোদ আর প্রখর গরম গ্রীষ্মের বৈশিষ্ট্য। বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত এই ঋতু বিরাজ করে যায়। এই ঋতুতে আম, জাম, কাঁঠালের মতো সুস্বাদু ফল পাকে।গ্রীষ্মের শেষের ঝড়ো হাওয়া যেন বর্ষার আগমনী বার্তা নিয়ে হাজির হয়।

বর্ষাকাল

বর্ষাকাল, জলের ঝর্ণাধারার ঋতু। মেঘের গর্জন, বৃষ্টির ঝুমঝুম যেন বর্ষার সুর।ধানক্ষেত ভরে ওঠে সবুজে আর নদী-নালা জলে ভরে ওঠে। বর্ষার এই মনোরম পরিবেশে ব্যাঙ গানের সুর ধরে এবং জলাশয়ে শাপলা ফুল যেন নতুন যৌবনতা পায়।

শরৎকাল

শরৎ, ফসল কাটার ঋতু। এই ঋতুতে ধানক্ষেত সোনালী রঙ্গে ঝলমল করে। নীল আকাশে ভেসে বেড়ায় সাদা গুচ্ছ মেঘের দল।পদ্মফুলের নতুন সাজ-সজ্জা, মৃদু বাতাস এবং পাতা ঝরে যাওয়ার শব্দে মেতে ওঠে প্রকৃতি।কোমল বাতাসের সাথে ভেসে বেড়ায় কাশফুলের সুবাস।

হেমন্তকাল

হেমন্ত, শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে হাজির হয়। এই ঋতুতে দিনগুলো ক্রমশ ছোট হতে থাকে।হেমন্তের সকালে দেখা যায় কুয়াশার মায়াজাল।

শীতকাল

শীতকাল বাংলার সবচেয়ে ঠাণ্ডা ঋতু। তীব্র শীতের তাপে কাঁপে প্রকৃতি।কুয়াশার চাঁদরে ঢাকা থাকে চারপাশ। শীতের রাতে আলোকে সাথে নিয়ে তারারা ঝলমল করে উঠে।কম্বল মুড়িয়ে বসে গল্প শোনা, গান শোনা ইত্যাদি মিলিয়ে আনন্দে মেতে থাকে ঘর-বাড়ি।

বসন্তকাল

বসন্তকাল বাংলার নবজাগরণের ঋতু। ফাগুনের মৃদু হাওয়া, হলুদ-কমলা ফুলের ছড়াছড়ি এবং পাখির কলধ্বনি বসন্তের আনন্দ বার্তা জানায়। পলাশ, আম, জামরুল, শিমুল, বকুল আর কৃষ্ঞচূড়াদের রঙে বনানী ভরে যায় রঙের সমারোহে। হাওয়ায় ভেসে বেড়ায় মিষ্টি সুভাস। নতুন নতুন পাতায় সুভিত হয় গাছপালা।ঋতুরাজ বসন্তে প্রকৃতি যেন নতুন করে জেগে ওঠে।

এই ছয় ঋতুর মহাকাব্যে বাংলার প্রকৃতির অপার রুপ-সৌন্দর্য্য সকলকে বিমোহিত করে। ছয় ঋতুর নিয়মিত পরিবর্তন এই দেশকে করে তুলে আরো আকর্ষণীয়। প্রতিটি ঋতুই বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url